লকডাউনে অসুস্থ বাবা, সাইকেলে ২ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিল ছেলে

চলছে লকডাউন।ক.রোনা ভাইরাস তাণ্ডব এড়াতে স্থবির পুরো ভারত। বন্ধ সব ধরনের গণপরিবহন।

এর মধ্যেই খবর আসে স্ট্রোক করেছেন বাবা।মুহুর্তেই যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে যুবক আরিফের মাথায়।

বাবাকে কী একনজর দেখতে পাবেন না আর। হাত বুলাতে পারবেন না আর অসুস্থ বাবার মাথায়!হতাশায়,কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

কিন্তু সেটা ক্ষণিকের জন্য।পরক্ষণেই তিনি নিজেকে সামলে দুঃসাহসী এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। তার অতি সাধারণ সাইকেলটি নিয়েই তিনি রওনা হবেন বাড়ি।

যে কোনো উপায়েই হোক বাড়ি তাকে ফিরতেই হবে।জীবিত না পারলে অন্তত তার লা.শটি যেন পৌঁছায় বাড়িতে।

বছর তিরিশের তরুণ আরিফ একটি অ্যাপার্টমেন্টে নিরাপত্তারক্ষির কাজ করেন। বাবা-মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা থাকের ২ হাজার কিলোমিটার দূরে-জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে।

গত ১ এপ্রিল তার বাবা ওয়াজির হুসেইন ব্রেন স্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বাবার অসুস্থতার খবরে প্রথমে মুষড়ে পড়লেও পরে নিজেকে সামলে নিজের পুরনো সাইকেলটি নিয়ে একাই বেড়িয়ে পড়েন আরিফ। সঙ্গে কয়েক প্যাকেট বিস্কুট আর বোতল ভরা পানি।

এরপর বাকিটা ইতিহাস। প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পাড়ি দেন আরিফ। পথে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) এর সদস্যরা তাঁকে আটক করে মামলার করার উদ্যোগ নেয়।

কিন্তু পরে আরিফের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে তাকে আটকে রেখেই নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা যাচাই করেন। সত্যতা পেয়ে আরিফের পিতৃভক্তি, সাহস ও দায়িত্ববোধে তারা মুগ্ধ হয়ে যান।

তাই তারা আরিফকে ছেড়ে দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ মনে করেননি। তার বাবার চিকিৎসায় সহায়তা করারও সিদ্ধান্ত নেন।

তাদের চেষ্টায় সিআরপিএফ এর জম্মু ইউনিটের সদস্যরা আরিফের বাবাকে হেলিকপ্টারে করে জম্মুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। আর আরিফকে সিআরপিএফ এর গাড়িতে করে তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *