রিফাত হ.ত্যা মামলা: মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃ’ত্যুদ’ণ্ড

দেশের বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হ’ত্যাকা’ণ্ডের বিরুদ্ধে দায়ের করা মা’মলার রায় দেয়া হয়েছে। রায়ে প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ৬ জনকে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি ৬ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

মৃ’ত্যুদ’ণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মা’মলার প্রধান স্বাক্ষী থেকে আসামি বনে যাওয়া সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র নি’হত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিও রয়েছেন।

একই সঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। আসামিদের মৃ’ত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁ’সিতে ঝুলিয়ে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্য আ’সামিরা ৭ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরগুনা জেলা দায়রা ও জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। কয়েকশ পৃষ্ঠার রায় বিচারক সারসংক্ষেপে মূল অংশ পড়ে শোনান।

মৃ’ত্যুদ’ণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)।

আর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. মুসা (২২),  রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯), ও কামরুল ইসলাম সাইমুন (২১)।

এদিন সকাল ৮টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত আদালতে প্রবেশ করেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আইনজীবীর জামিনে থাকা রিফাতের স্ত্রী ও এ মা’মলার অন্যতম রহস্যময় আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে করে আদালত প্রাঙ্গণে পৌছান।

পৌনে ১২টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয় ৮ আসামিকে। আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ছাড়া ৯ আ’সামির মধ্যে মো. মুসা ঘটনার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুইপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজকের (বুধবার) দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী স’ন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কু’পিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আ’হত করে। এরপর বীরদর্পে অ’স্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। গুরুতর আ’হত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই দিনই মা’রা যান।

গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হ’ত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে রিফাত হ’ত্যা মা’মলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযু’দ্ধে নি’হত হওয়ায় তাকে মা’মলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

গত ১ জানুয়ারি রিফাত হ’ত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আ’সামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে, গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হ’ত্যা মা’মলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আ’সামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।

প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আ’সামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এক আ’সামির পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সব আ’সামির পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

১৬ সেপ্টেম্বর নি’হত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে নি’র্দোষ প্রমাণের জন্য আদালতে উপস্থাপিত যুক্তিখণ্ডন শেষে এ রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *