চাকরি না পেয়ে, লাইভে এসে সব সার্টিফিকেট ছিঁ’ড়ে ফেললেন যুবক
এবার স্নাতক শেষ করেই অ’ভাবের সংসারের হাল ধর’তে সরকারি ও বেসরকারি চাকরির চেষ্টা করেছেন নীলফামারীর যুবক বাদশা মিয়া। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও মেলেনি চাকরি। এদিকে সরকারি চাকরিরও বয়স শেষ হয়ে গেছে। এ হ’তাশায় সব একাডেমিক স’নদপত্র ছিঁ’ড়ে ফেলেন তিনি।
গতকাল সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস’বুক লাইভে নিজের শিক্ষা জীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদপ’ত্রগুলো ছিঁ’ড়ে ফেলেন তিনি।
এদিকে লাইভে বাদশা বলেন, ‘আসলে আমার ভাগ্য’টাই খা”রাপ! কত মানুষ ভু’য়া সা’র্টিফিকেট বানিয়ে চাকরি করছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে
দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সনদপত্র অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ, এখন এগুলো রেখে লাভ কী? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি।’
বাদশা আরও বলেন, ‘আমার বাবা খেয়ে না খে’য়ে আমাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অ’স’হায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা।
এরা না পারে চাকরি জো’টাতে, আবার অ’র্থের অ”ভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করতে।’ বাদশার সেই ফেসবুক লাইভে তার পরিচিত-অপ’রিচিত অনেকেই ম’ন্তব্য করেছেন। অনেকেই বাদশার এমন কাজের বি’রো’ধিতা করেছেন, আবার অনেকেই দিয়েছেন সা’ন্ত্বনা।
শুধু বাদশাই নন এমন হ’তাশা দে’শের কো’টি যুবকে’র বলেও’ মন্তব্য করেছেন অনেকে। জানা যায়, বাদশা মিয়া উপজে’লার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর ‘খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে।
পরিবারের ছয় ভাই-বোনের মধ্যে বড় তিনি। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনের ব্যক্তি অ’সহা’য় বাবা মহুবা’র রহমান। বাদশা পাঙ্গা চৌপতি আব্দুল মজিদ দাখিল মাদরাসা থেকে ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল, ২০০৯ সালে
সোনাখুলি মুন্সিপাড়া কামিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে বি’জ্ঞান বিভাগে আলিম এবং ২০১৪ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে অর্থের অ’ভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি বাদশা।
এ বিষয়ে বাদশার বাবা মহুবার রহমান বলেন, ‘বাদশা তো মেলাদিন থেকে চা’করি খুঁজে পায় না। পরিবারেও অ’ভাব। রা’গ করে কাউকে না জানিয়ে এটা করছে। এ নিয়ে আমি নিজেও বোঝাইছি। ছেলে মানুষ করে ফেলছে কী করবেন আর।’
এদিকে মানবতা ফাউন্ডেশনের ডিমলা শাখার সভাপতি আবু সা’ঈদ সিয়াম বলেন, ‘বাদশা ভাই হ’তাশা থেকেই করেছেন। আমরা কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন আজ মিটিং করবো ঠিক করেছি৷ তার পাশে দাঁ’ড়ানোর চেষ্টা করবো।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা তো একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারবো না।
আমরা যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় তাকে নিয়ে আসবো। যাতে সে উদ্যোক্তা হতে পারে। যাতে সে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে। আগামী যেকোনো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের আওতায় আমরা তাকে অবশ্যই আনবো।