মসজিদের খাটিয়া দেয়নি: বাবা-ভাইরা কাঁধে করে নিল লা.শ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মা.রা যাওয়া এক যুবকের লা.শ দাফনে মসজিদের খাটিয়া ব্যবহার করতে না দেয়া ও দাফনের সময় গোসল না করানোর অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
তবে এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলছে প্রশাসন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন মেম্বাররা।
বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই যুবকের সাদা কা.ফনের কাপড়ে মোড়ানো একটি ছবি শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।
মা.রা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় বক্তারপুর গ্রামে ক.রোনারভা.ইরাসের উপসর্গ জ্বর, গলা ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মো. সালাম (২২) মা.রা যান।
তিনি সিলেটের একটি ইট ভাটায় কাজ করতেন। ঘটনার পরদিন বুধবার সকালে করোনা উপসর্গে মা.রা যাওয়ায় তার নমুনা সংগ্রহ করা ও দাফনের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িতে উপস্থিত হন।
সালামের নমুনা সংগ্রহ করার পর তার লা.শ না গোসল করিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন কর্মকর্তারা।
এসময় সালামের মা সালেমা বেগম তার ছেলের লা.শ গোসল করানোর জন্য পানি এনে দিলেও উপস্থিত কর্মকর্তারা বাধা দেন বলে অভিযোগ পরিবারের।
তাদের অভিযোগ, লা.শ বহনের জন্য খাটিয়া দেয়নি গ্রামের মসজিদ। পরে অন্য একটি গ্রাম থেকে খাটিয়া নিয়ে আসলেও সেই খাটিয়ায় লা.শ শোয়াতে বাধা দেন ইউপি মেম্বার শরিফ উল্লাহ।
এছাড়া নিয়মনুযায়ী ক.রোনা উপসর্গ মা.রা যাওয়া ব্যক্তির লা’শ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা দাফন করার কথা থাকলেও সেটিও করেন নি তারা।
মা.রা যাওয়া সালামের বাবা জইবুর রহমান ও তার দুই ছেলে খালিক ও আলীনূর মিলে ল.’শটি কবরে দাফন করেন।
তবে করোনা উপসর্গ নিয়ে মা.রা যাওয়া শ্রমিক মো. সালামের দাফন স্বাস্থ্য বিধি মেনেই দাফন হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন।
তাদের দাবি তার লা.শ তার পরিবারের লোকজন হাত দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরাই তাকে দাফন করান।
সালামের মা সালেমা বেগম বলেন, আমার ছেলে মা.রা গেছে কিন্তু কেউ আগাইয়া আইছে না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের লোকজন আইয়া আমার ছেলের শরীরও একটা পাউডার ছিটাইয়া দিছে আর একজন হুজুর আনছে কিন্তু আমার ছেলেরে গোসল করাইছে না।
আমি তারারে পানি আনিয়া দিলেও তারা আমার ছেলেরে গোসল করায় নাই তারা। আমার ছেলে লা.শ কেউ হাত দেয়নি, তার বাবা ও ভাইরা মিলেই সবকিছু করছে। আমার ছেলেরে খাটিয়ায় তুলতে দিসে না মেম্বারে। আমারে গালিগালাজ করছে কেনে আমি ছেলেরে খাটিয়া তুলার কথা কইলাম।
তিনি আরো বলেন, প্রশাসন আমাকে আমার ছেলের রির্পোট দিতে অইবো। আমার ছেলের এসব কিছু আছিল না। আমার ছেলে যদি রিপোর্টে এসব কিছু না আসে তাহলে আমি পুলিশের মাধ্যমে আমার ছেলের লা.শ আবার উত্তোলন করে শরিয়ত অনুযায়ী দাফন করাইমু।
এদিকে তার বাবা জইবুর মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে মারা যাওয়া পর মেম্বার আমাকে বলে লা.শ যেনো কিছু না করি। পরদিন পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোক আইসা আমার ছেলের শরীরের নমুনা নেয় কিন্তু পরবর্তীতে তারা আমার ছেলেরে খাটিয়ায় তুলতে দিসে না।
যারা আইছিল তারা তাড়াহুরা করছে পরে আমি আর আমার দুই ছেলে মিলিয়া তারে দাফন করি আর সবাই দূরে দাড়াইয়া রইছিল।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি মেম্বার শরিফ উল্লাহ বলেন, তার পরিবারের লোকজন স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের উপর চড়াও হয়। তারা দাবি করে কেনো তাদের ছেলের মৃ.ত্যুকে ক.রোনা ভাইরাসের নাম দিয়ে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।
এসময় মা.রা যাওয়া সালামের মা সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন পরবর্তীতে পঞ্চায়তের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়ে আসা খাটিয়া ফেরত নেওয়া হয়। আমি তাদের কোন গালিগালাজ করি নি।